Article Tag No. 31142
© Abiyad Ahmed
© Abiyad Ahmed
অসমাপ্তির বিচ্ছেদ
অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি আজও ঘোচেনি, এখনও “স্বার্থ” নামক বিশেষ্য তাড়না করে।
একধারে নিজস্বতা বলে সমীকরণ সূত্রযোগে মেলেই-না, অন্যদিকে, পরসত্ত্বা নিয়ে জীবনের
সূর ও ছন্দ। কবিদের কালি সত্যিই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে কারণ সংলাপে আর বিবেচ্য বানী
লেখে না, ফলতঃ কঠিনেরও যে কঠিন হল সত্য এবং তাতেই আমাদের বেড়ে ওঠা সেটা স্নেহগন্ধা
আগামী শতাব্দীতেও বুঝবেনা।
অনাদিকালেই পরিচয় আদি এবং স্নেহগন্ধার, এক অদ্ভুত সৌন্দর্য্য গ্রাস করেছিল
আদির হৃদয় স্পন্দনকে, এককথায় বর্তমানের লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট! দোদুল্যমান জীবনে
একটা প্রেম বাঙ্গালীর অপ্রিয় যায়না বরং একরাশ আনন্দে বিনিদ্র রাতে নৌবহরে
প্রেমিকার প্রপোসাল নিয়ে ধ্যানমগ্ন থাকে। আদি সেদিনের প্রেমটায় শুরু করেছিল খোলা
আকাশের নীচে সবুজ সমীরন ঘাসের বুকে – আলাপের গল্পে ছিল স্নেহগন্ধার কালো কাজলের
প্রসংশা, অভিমানগুলো ছিল বসন্তের মৃদু বাতাসের মত। এইভাবেই একের অজান্তে বিক্ষিপ্ত
ভালোবাসার উদয় এবং চার হাতে তাদের পথচলার অঙ্গীকার। কখনো দু’ধার খোলা লেকের নির্মল
প্রকৃতিচ্ছায়ায় আবারও কোনদিন নিরুদ্দেশের প্রেমটা প্রখর দুপুরে ট্রামলাইন ধরে
ধর্মতলার রাস্তায় উঁকি দিয়েছে। কিন্তু সময়ের ডালে ফুরিয়ে যায় প্রেম, তেমন-ই বদলের
বীজগনিতে ৪ বছরের রাশিমালা পাল্টে ফেলেছিল আদি ও স্নেহগন্ধা। নামিদামি জাঁকজমক ভরা
রেস্তরাঁয় তাদের উঠা-বসা, বেশ আনন্দের সাথে উপভোগ করেছে স্নেহগন্ধা তাঁর ভালোবাসার
মানুষটিকে, কখনো শীতের সকালে ময়দানের ভেজা ঘাসে কখনো শরতের সূর্যোদয়ে। এইভাবেই হঠাৎ
শব্দযুগলের নিষ্ঠুর আত্মপ্রকাশ ঘটল এবং ফ্যান্টাসির সব রোমান্টিসিজম তীব্র উদ্বেগে
কুপোকাত করে ফেলল আদির গড়া আনন্দের বহ্নিঃশিখায়। এখন আদির আকাশে নির্মল মেঘে অঝোর
শ্রাবণ নামে; কেন সে জানল না যে স্নেহগন্ধা আজ বাস্তবসন্ধানী – আদির প্রতি এই
বিশেষণ ঘৃণার সঞ্চার ঘটিয়েছে।
ইতিহাসিক সংগ্রাম নয় তবুও আদি বিদ্রোহী বটে, সে তাঁর স্বপ্নগুলোকে অপমানিত হতে
দেইনি, লাঞ্ছনা নিজেই নিয়ে সে আজ প্রতিচ্ছবি গড়ে তুলেছে স্নেহগন্ধার আরশীনগরে। মৌনতায়
ভরা বাস্তবের যৌগিক সংখ্যাগুলো আজ সত্যিই ঊর্ধ্বতক্রমে ছাপিয়ে তুলেছে দূরত্বের
গাণিতিক রূপটা।
দীর্ঘ প্রতিক্ষার অট্টহাসি স্নেহগন্ধার ঠোঁটে ফুটুক, অধ্যায়ের সমাপ্তি নামুক।