Friday, November 10, 2017

ফিরে যেতে চাই মাতৃক্রোড়ে

Article Tag No. 31219
© Abiyad Ahmed 


ফিরে যেতে চাই মাতৃক্রোড়ে 
লেখক: আবিয়াদ আহমেদ 


অস্বস্তি, একটা নির্বিকার চূড়া বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আমার দৈনন্দিন কর্মযজ্ঞে। কিছু বুঝতে পারছিনা, বদ্ধ উন্মাদ হয়ে বসেছি মনে হয় - তবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়িনি। একাকিত্ব জিনিসটা পুরোপুরি গ্রাস করে ফেলেছে আমার নিকটস্থ সব হৃদ-গহ্বরকে, বেসামাল দুশ্চিন্তা হামেশাই আসে যায় বিনা পারিশ্রমিক দিয়েই। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে থমকে গেছে, বংশীর টোপে আটকে পড়েছি - ভাঙাচোরা উদ্বেল আকাঙ্খা নিয়ে। চিরে দেখতে পারো বুকের ক্ষতগুলো, জীবন যে শুধু বই নিয়েই সীমাবদ্ধ তা নয় কিন্তু আমাদের সমাজ ব্যবস্থা এতটাই লাজুক যে কোনও কিছু এক্সপ্লোর করার মূল্য দিতে শেখেনি। জাগ্রত জনজীবনে, হুঙ্কার দেয় কেরিয়ার এর তাড়না - অমাবস্যার রাতে ভাটার মত। কাউন্সেলিং? তা নিয়ে এগোচ্ছিনা কারণ যতটুকু সেন্স আছে, তাতে মনে হয় একজন ভালো সঙ্গী নিয়ে জীবনটা শুরু করবো - সেটা নিয়েও প্রবাদ আছে মানবকূলের! সঙ্গী শুধু ‘স্ত্রী’ হতে হবে তেমন নয়, মানুষ এককথায় ‘সামাজিক জীব’ রোজনামচা দেখে জীবনটা কাটিয়ে হাঁফ ধরেছে। জীবনের বাইরেও একটা ‘নিজস্বতা’ আছে এটা বোঝানোর মত না অভিভাবক পেলাম না কোনও আত্মীয়-স্বজন - যাকেই বোঝাতে যায় সেই ফুলহারা নদীর মত ফেঁপে ওঠে, গর্জিত হয়ে ওঠে আর বড় চকে শুধু এটাই বলে “অকালপক্ক, পড়াশুন ছাড়া জীবনে কিছু নেই” তত্ত্বটা ভুল, প্রমান করেছে পদার্থবিদ্যা! কী বলেছে পদার্থবিদ্যা? বলেছে পদার্থের ‘দ্বিত্ব সত্ত্বা’ আছে যেটা ইংলিশে ডুয়াল নেচার। নিজের মনের সাথে প্রতিনিত ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতাগুলো নির্মম ভাবে মারা যাচ্ছে - সমাজের পরিকল্পনাগুলো এমনই করুণ তাতে আমার শবদেহ নিয়ে শোকার্ত হয়ে দুদিন কাটিয়ে দেবে কিন্তু আমার শবদেহ সম মনটা নিয়ে কাউর ‘রা’ ওঠেনা। খুব ইচ্ছে হয় পাখি হতে যাদের কোনও চিন্তার লেশমাত্র থাকেনা, বেমানান কোনও চাহিদা পড়েনা। আমরা নিজের কাছে কিছু জানতে চাইলে লজ্জিত হয়, জীবনের স্বাদ বলতে শুধু পড়া-লেখা-কেরিয়ার এটাই বুঝে এলাম। মানসিক শান্তি না থাকলে রাজকোশ নিয়েও সুখে থাকা যায়না - এটা পরিবারের পক্ষ থেকে উল্লেখ্য ভুল বিবেচিত হয়। ভরণ-পোষণের দুটো মুঠো ভাত আর লজ্জা নিবারণের জন্য কাপড়, রাতের খোলা আকাশের নিচে মাথা গুঁজে থাকার আশ্রয়, জীবনধারণের যে অর্থের প্রয়োজন সেটা - মানসিক সুস্থ্যতা থাকলে এমনিতেই কোনো ভয়ংকর রোগের প্রকোপ থাকেনা। তাও যেন বদ্ধ উন্মাদ আমি, কূলের পাড়ে ময়ূরের কান্না! চোখ ভিজে জল পড়ে, যার অর্থ বোঝালাম কিন্তু ‘অবুঝ’ সমাজ আর বন্ধুসুলভ পিতামাতার অভাবে নিমজ্জিত আমি আবার ফিরে যেতে চাই দূরদেশে - মাতৃগর্ভে!

            "অলক্ষ্যে বাজে নিনাদ, তেষ্টা পেয়েছে খুব -
বাঁশির সূরে ফাটল ধরেছে টুটে গেছে গান,
           বেঁচে থেকেও যে জর্জরিত দেহ দিচ্ছে ডুব -
কালবেলাকার উচ্ছাসে, মাতৃক্রোড়ে - ফিরতে চাই মোর প্রাণ!"